সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

PR পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন বলতে কি বোঝায়?




PR পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন বলতে বোঝায় Proportional Representation (অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) ভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি। এটি এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে আসন পায়। বাংলাদেশের মতো দেশের বিদ্যমান প্রথম-পাস্ট-দ্য-পোস্ট (FPTP) পদ্ধতির ভিন্ন এক ধারণা এটি।

PR পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ:
1. ভোটের অনুপাতে আসন বরাদ্দ: দল যত শতাংশ ভোট পাবে, তত শতাংশ আসন পাবে।
2. দলীয় তালিকা ভিত্তিক প্রার্থী: সাধারণত দল আগে থেকেই একটি প্রার্থী তালিকা তৈরি করে রাখে।
3. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সুযোগ সীমিত: এটি দলভিত্তিক পদ্ধতি, তাই স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য নির্বাচনে জয় পাওয়া কঠিন।

 উদাহরণ:
ধরা যাক, একটি সংসদে 300টি আসন রয়েছে।
দল ভোটের হার প্রাপ্ত আসন (PR পদ্ধতিতে)
দল A 40% 120 আসন
দল B 35% 105 আসন
দল C 20% 60 আসন
অন্যান্য 5% 15 আসন
---------------------------
মোট 100% ৩০০ আসন

এখানে একজন প্রার্থী নিজের এলাকা থেকে জয়ী না হলেও, তার দল যদি মোট ভোটে ভালো করে, তবে সেই দল থেকে তিনি সংসদ সদস্য হতে পারেন।

 সুবিধা:
ক্ষুদ্র দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। জনগণের মতামতের যথাযথ প্রতিফলন ঘটে। এককদলীয় কর্তৃত্ব কমে।

 অসুবিধা:
সরকার গঠনে জোট বাধ্যতামূলক হতে পারে, স্থিতিশীলতা হ্রাস পায়। জনগণ সরাসরি প্রার্থীকে নয়, দলকে ভোট দেয়। পরিচিত মুখের প্রতি আস্থা কমে। জবাবদিহিতা কমতে পারে।

 উপসংহার:
PR পদ্ধতি গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্বকে আরও বিস্তৃত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুললেও এর বাস্তবায়ন জটিল, বিশেষ করে যেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি দলীয় দ্বন্দ্বমুখী ও ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। তবে একটি মিশ্র ব্যবস্থা (Mixed Electoral System) — যেমন, কিছু আসনে FPTP আর কিছু আসনে PR — অনেক দেশেই কার্যকরভাবে চালু আছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি ভাবনার বিষয় হতে পারে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চুক্তিভিত্তিক/অস্থায়ী কর্মীদের জন্য সংবিধানের প্রাসঙ্গিক ধারা:

  ধারা ২০(১)  রাষ্ট্র শ্রমকে মর্যাদা দেবে এবং উপযুক্ত পুরস্কার দানে নিশ্চিত করবে। এটি শ্রমের সম্মান, নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার কথা বলে, যা অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।  ধারা ২৯(১)  প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ ও পদপ্রাপ্তি সকল নাগরিকের জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত থাকবে। এটা চুক্তিভিত্তিক বা অস্থায়ী নিয়োগে যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করার কথা বলে। ধারা ২৯(৩)  এখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র কোনো বৈষম্য করবে না, তবে কিছু ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা থাকতে পারে (যেমন প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইত্যাদি)। প্রশাসনিক নীতিমালা ও নির্দেশনা: বাংলাদেশে চুক্তিভিত্তিক বা অনিয়মিত কর্মচারীদের বিষয়ে মূলত বিভিন্ন প্রশাসনিক পরিপত্র (office order/circular) অনুসরণ করা হয়: ১. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা (চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ): চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা” অনুসারে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বা বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা ও সীমাবদ্ধতা: নির্ধারিত মেয়াদে (সা...

পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে নেই অগ্রগতি মাঠে অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে অগ্রগতি নেই, মাঠ পর্যায়ে বাড়ছে অস্থিরতা। পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত সংস্কার কার্যক্রমে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন (বাপবিএ)-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকারের লিখিত আশ্বাসের ভিত্তিতে চলমান আন্দোলন গত ৫ জুন ২০২৫ তারিখে স্থগিত করা হলেও গত দুই মাসে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে ১৭ জুন দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছিল — একটি REB-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা কোম্পানি গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব তৈরির জন্য এবং অন্যটি মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়মিতকরণ ও অন্যায় বদলির বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য। তবে বাস্তবে এসব বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনকালীন সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৫ জন লাইনক্রুর বিষয়টি এখনও অনিষ্পন্ন রয়েছে। পাশাপাশি সাময়িক বরখাস্ত, বদলি ও সংযুক্তদের পদায়ন, চাক...

বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি পুনঃপর্যালোচনায় সরকারের সিদ্ধান্ত: অর্থ উপদেষ্টা

 বর্তমান সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে করা বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংক্রান্ত সব দেশি-বিদেশি চুক্তি পুনঃমূল্যায়ন করা হবে। ১৫ জুলাই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে কিছু বিদ্যুৎ প্রকল্পে চুক্তি করা হয়েছে যেগুলোর শর্ত অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যপূর্ণ। এসব চুক্তি যাচাইয়ের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে এবং আমরা সেই অনুযায়ী আইনগত সহায়তা নিয়ে কাজ করছি।” তিনি আরও বলেন, “সরকারি খাদ্য মজুত বর্তমানে সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে—বোরো ধান সবচেয়ে বেশি, এরপর আমন, এবং আউশ সবচেয়ে কম কেনা হয়।” এ সময় তিনি আরও জানান, আগামী ৫ আগস্ট ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ উদ্বোধন করা হবে এবং এর নির্মাণ খরচ ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।