সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে নেই অগ্রগতি মাঠে অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে অগ্রগতি নেই, মাঠ পর্যায়ে বাড়ছে অস্থিরতা।



পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত সংস্কার কার্যক্রমে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন (বাপবিএ)-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকারের লিখিত আশ্বাসের ভিত্তিতে চলমান আন্দোলন গত ৫ জুন ২০২৫ তারিখে স্থগিত করা হলেও গত দুই মাসে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে ১৭ জুন দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছিল — একটি REB-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা কোম্পানি গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব তৈরির জন্য এবং অন্যটি মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়মিতকরণ ও অন্যায় বদলির বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য। তবে বাস্তবে এসব বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে।

সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনকালীন সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৫ জন লাইনক্রুর বিষয়টি এখনও অনিষ্পন্ন রয়েছে। পাশাপাশি সাময়িক বরখাস্ত, বদলি ও সংযুক্তদের পদায়ন, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, এবং হয়রানিমূলক বদলি আদেশগুলো স্থগিত না হওয়ায় প্রশাসনিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে।


আরইবি’র ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ বিভাগ সিদ্ধান্ত দিলেও REB সমিতিগুলোতে মালামাল সরবরাহ বন্ধসহ বিভিন্ন উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় এক হাজার লাইনম্যান ও সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারকে এখনও পদায়ন করা হয়নি, যার ফলে কৃত্রিম জনবল সংকট সৃষ্টি হয়েছে।


এছাড়াও, অতিরিক্ত কাজের ওভারটাইম-ভাতা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসা, বিভিন্ন নামে ৬ ধরনের অডিট পরিচালনা, এবং বিদ্যুৎ কর্মীদের হয়রানি — এসবই সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে। বাপবিএ জানায়, চলতি মাসেই জনবল সংকট ও অনিয়মের কারণে ছয়জন বিদ্যুৎ কর্মী দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।


প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের অক্টোবরে ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাবন্দি করার ঘটনাও পুনরায় আলোচনায় এসেছে।


বাপবিএ মনে করে, দীর্ঘদিনে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট না আসা এবং চলতি বছরের মে মাসে গঠিত নতুন দুটি কমিটির কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া এ সংকটকে আরও গভীর করছে। তারা চলতি জুলাই মাসের মধ্যেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদী সমস্যাগুলোর সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।


সংগঠনটি REB-এর ছয় ধরনের ‘মনগড়া’ অডিটিং কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করে কেবলমাত্র সরকার অনুমোদিত অডিট কার্যক্রম বজায় রাখার দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় মাঠ পর্যায়ে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে বলেও সতর্ক করেছে।

Facebook             YouTube       Email

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for comments
PBSCOP Admin Panel

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চুক্তিভিত্তিক/অস্থায়ী কর্মীদের জন্য সংবিধানের প্রাসঙ্গিক ধারা:

  ধারা ২০(১)  রাষ্ট্র শ্রমকে মর্যাদা দেবে এবং উপযুক্ত পুরস্কার দানে নিশ্চিত করবে। এটি শ্রমের সম্মান, নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার কথা বলে, যা অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।  ধারা ২৯(১)  প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ ও পদপ্রাপ্তি সকল নাগরিকের জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত থাকবে। এটা চুক্তিভিত্তিক বা অস্থায়ী নিয়োগে যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করার কথা বলে। ধারা ২৯(৩)  এখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র কোনো বৈষম্য করবে না, তবে কিছু ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা থাকতে পারে (যেমন প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইত্যাদি)। প্রশাসনিক নীতিমালা ও নির্দেশনা: বাংলাদেশে চুক্তিভিত্তিক বা অনিয়মিত কর্মচারীদের বিষয়ে মূলত বিভিন্ন প্রশাসনিক পরিপত্র (office order/circular) অনুসরণ করা হয়: ১. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা (চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ): চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা” অনুসারে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বা বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা ও সীমাবদ্ধতা: নির্ধারিত মেয়াদে (সা...

বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি পুনঃপর্যালোচনায় সরকারের সিদ্ধান্ত: অর্থ উপদেষ্টা

 বর্তমান সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে করা বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংক্রান্ত সব দেশি-বিদেশি চুক্তি পুনঃমূল্যায়ন করা হবে। ১৫ জুলাই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে কিছু বিদ্যুৎ প্রকল্পে চুক্তি করা হয়েছে যেগুলোর শর্ত অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যপূর্ণ। এসব চুক্তি যাচাইয়ের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে এবং আমরা সেই অনুযায়ী আইনগত সহায়তা নিয়ে কাজ করছি।” তিনি আরও বলেন, “সরকারি খাদ্য মজুত বর্তমানে সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে—বোরো ধান সবচেয়ে বেশি, এরপর আমন, এবং আউশ সবচেয়ে কম কেনা হয়।” এ সময় তিনি আরও জানান, আগামী ৫ আগস্ট ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ উদ্বোধন করা হবে এবং এর নির্মাণ খরচ ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।