সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার কারণ আর্থিং রড সংযোগের ভুল করার কারণে।

 


 ১. আর্থিং রড কী?

আর্থিং রড (Earthing Rod) হল একটি ধাতব রড, যা মাটির গভীরে স্থাপন করা হয়। এর কাজ, বাড়ি বা কারখানায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় যেকোনো অতিরিক্ত বা ফাঁস হওয়া (leakage) বিদ্যুৎ মাটিতে প্রবাহিত করা

মানুষ ও যন্ত্রপাতিকে বৈদ্যুতিক শকে থেকে রক্ষা করা

বৈদ্যুতিক সার্কিটে ভোল্টেজের ভারসাম্য বজায় রাখা


২. ভুল সংযোগ কীভাবে হয়?

 অনেকেই আর্থিং রডের তারটি সরাসরি মেইন সুইচের বা লোড সাইডের নিউট্রালের সাথে সংযুক্ত করেন। এরপর সেই লাইন থেকে পুরো বাড়ির বিদ্যুৎ সিস্টেমে নিউট্রাল কমন করে ব্যবহার করেন। এর ফলে যা হতে পারে, আর্থিং লাইন ও নিউট্রাল লাইন মিশে যায়, এতে করে আর্থিং তার সুরক্ষা ভূমিকা হারিয়ে ফেলে।

হঠাৎ শর্ট সার্কিট হলে, বিদ্যুৎ আর আর্থিং হয়ে মাটিতে যাবে না — এতে শক লাগার সম্ভাবনা থাকে।

অনেক সময় "Earth return path" তৈরি হয়, যা বিদ্যুৎ মিটারের মাধ্যমে ফিরে না গিয়ে আর্থিং দিয়ে চলে যায় — এতে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে।


 ৩. সঠিক সংযোগ কীভাবে হওয়া উচিত?

 আর্থিং রডের তার মিটারের সোর্স সাইড (পাওয়ার কোম্পানির দিকের নিউট্রাল লাইনের সাথে) সংযুক্ত করতে হবে। এর মানে মিটার বক্সের যেখান থেকে বিদ্যুৎ আসে, সেখানেই নিউট্রাল তারের সাথে আর্থিং তার জোড়া দিতে হবে। এরপর সেই সঠিকভাবে আর্থ হওয়া নিউট্রাল আপনার মেইন সুইচে যাবে। এতে আপনার পুরো বাড়ি সিস্টেম নিরাপদ থাকবে এবং আর্থিং কাজ করবে একটি স্বাধীন সুরক্ষা উপাদান হিসেবে।


 ৪. বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার কারণ কী?

যখন আর্থিং রড দিয়ে নিউট্রাল কমন করে সার্কিট চালানো হয়, তখন অনেক সময় কিছু কারেন্ট আর্থিং লাইনে প্রবাহিত হয়ে মিটারের হিসাবের বাইরে চলে যায়, আবার কখনও "Earth leakage" বা "Return current imbalance" এর কারণে মিটার বেশি ইউনিট গণনা করে এর ফলে দেখা যায়, আপনার বিদ্যুৎ ব্যবহার সাধারণ হলেও বিল অতিরিক্ত আসে। আপনি বুঝতেই পারেন না, কোথায় সমস্যা হচ্ছে।


 ৫. নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আইন অনুযায়ী, আর্থিং ও নিউট্রাল সম্পূর্ণ ভিন্ন সার্কিট, এগুলোকে মিশিয়ে ফেলা বিপজ্জনক এবং আইনগতভাবে দণ্ডনীয়, বৈদ্যুতিক ইন্সপেকশন হলে এমন সংযোগ বাতিল হতে পারে।


 ৬. সাধারণ মানুষের করণীয়:

 নিজের বাসার বা অফিসের ইলেকট্রিশিয়ানকে দিয়ে আরো একবার চেক করান — আর্থিং সঠিক আছে কি না , প্রয়োজনে পল্লী বিদ্যুৎ বা সংশ্লিষ্ট ডেসকো কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ইলেকট্রিশিয়ান ব্যবহার করুন , সন্দেহ হলে মিটার থেকে মেইন পর্যন্ত লাইন ও আর্থিং আলাদা করে দেখুন।


সঠিক আর্থিং মানে: নিরাপদ জীবন, কম বিদ্যুৎ বিল, যন্ত্রপাতির দীর্ঘস্থায়িত্ব।


ভুল আর্থিং মানে: শকের ঝুঁকি, আইনভঙ্গ, অতিরিক্ত বিল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চুক্তিভিত্তিক/অস্থায়ী কর্মীদের জন্য সংবিধানের প্রাসঙ্গিক ধারা:

  ধারা ২০(১)  রাষ্ট্র শ্রমকে মর্যাদা দেবে এবং উপযুক্ত পুরস্কার দানে নিশ্চিত করবে। এটি শ্রমের সম্মান, নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার কথা বলে, যা অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।  ধারা ২৯(১)  প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ ও পদপ্রাপ্তি সকল নাগরিকের জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত থাকবে। এটা চুক্তিভিত্তিক বা অস্থায়ী নিয়োগে যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করার কথা বলে। ধারা ২৯(৩)  এখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র কোনো বৈষম্য করবে না, তবে কিছু ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা থাকতে পারে (যেমন প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইত্যাদি)। প্রশাসনিক নীতিমালা ও নির্দেশনা: বাংলাদেশে চুক্তিভিত্তিক বা অনিয়মিত কর্মচারীদের বিষয়ে মূলত বিভিন্ন প্রশাসনিক পরিপত্র (office order/circular) অনুসরণ করা হয়: ১. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা (চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ): চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা” অনুসারে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বা বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা ও সীমাবদ্ধতা: নির্ধারিত মেয়াদে (সা...

পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে নেই অগ্রগতি মাঠে অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে অগ্রগতি নেই, মাঠ পর্যায়ে বাড়ছে অস্থিরতা। পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত সংস্কার কার্যক্রমে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন (বাপবিএ)-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকারের লিখিত আশ্বাসের ভিত্তিতে চলমান আন্দোলন গত ৫ জুন ২০২৫ তারিখে স্থগিত করা হলেও গত দুই মাসে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে ১৭ জুন দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছিল — একটি REB-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা কোম্পানি গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব তৈরির জন্য এবং অন্যটি মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়মিতকরণ ও অন্যায় বদলির বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য। তবে বাস্তবে এসব বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনকালীন সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৫ জন লাইনক্রুর বিষয়টি এখনও অনিষ্পন্ন রয়েছে। পাশাপাশি সাময়িক বরখাস্ত, বদলি ও সংযুক্তদের পদায়ন, চাক...

বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি পুনঃপর্যালোচনায় সরকারের সিদ্ধান্ত: অর্থ উপদেষ্টা

 বর্তমান সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে করা বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংক্রান্ত সব দেশি-বিদেশি চুক্তি পুনঃমূল্যায়ন করা হবে। ১৫ জুলাই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে কিছু বিদ্যুৎ প্রকল্পে চুক্তি করা হয়েছে যেগুলোর শর্ত অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যপূর্ণ। এসব চুক্তি যাচাইয়ের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে এবং আমরা সেই অনুযায়ী আইনগত সহায়তা নিয়ে কাজ করছি।” তিনি আরও বলেন, “সরকারি খাদ্য মজুত বর্তমানে সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে—বোরো ধান সবচেয়ে বেশি, এরপর আমন, এবং আউশ সবচেয়ে কম কেনা হয়।” এ সময় তিনি আরও জানান, আগামী ৫ আগস্ট ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ উদ্বোধন করা হবে এবং এর নির্মাণ খরচ ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।