সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আবারও নতুন কমিটি গঠন: পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড ও সমিতির দ্বন্দ্বে সমাধানের পথে সময়ক্ষেপণ নাকি ফলপ্রসূ উদ্যোগ?



এতক্ষণ শুনলেন সংবাদ শিরোনাম এবার বিস্তারিত:

পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড (REB) এবং বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (PBS) মধ্যে চলমান সংঘাত, প্রশাসনিক জটিলতা এবং আস্থার সংকট দীর্ঘদিনের। ইতিপূর্বে এই সংকট নিরসনে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত ও সুপারিশ কমিটি গঠিত হয়েছে। এসব কমিটি বহু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ পেশ করেছে, যার মধ্যে মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা, জনবল কাঠামো, নিয়োগবিধি সংস্কার, হিসাবযোগ্যতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয় ছিল মুখ্য।


তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগ আবারও সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়, মতামত গ্রহণ এবং নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলে নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।


এই নতুন কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য আসলে কী?

১. পূর্ববর্তী সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন না হওয়ার ব্যর্থতা ঢাকতে নতুন প্রচেষ্টা?

২. মাঠ পর্যায়ে বর্তমান বাস্তবতা যাচাইয়ের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সুপারিশসমূহ হালনাগাদ করা?

৩. সমস্যার মূলে পৌঁছে দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত সমাধান খুঁজে বের করা?

৪. নাকি আবারও সময়ক্ষেপণ করে সমস্যাকে ঝুলিয়ে রাখার কৌশল মাত্র?


সমস্যা নিরসনে দীর্ঘসূত্রতা এবং এর ফলাফল

বিদ্যুৎ বিভাগের বারবার কমিটি গঠন ও পরিদর্শন কার্যক্রম কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, বারবার কমিটি করে সময় নষ্ট না করে, পূর্ববর্তী সুপারিশসমূহ থেকে যৌগিক সুপারিশ নিয়ে বাস্তবায়নের দিকে এগোনো উচিত ছিল। কারণ মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের আস্থা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।


কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যাশা

বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ ও দ্রুত বাস্তবায়ন।

ন্যায়সঙ্গত বদলি, নিয়োগ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা।

স্থানীয় সমিতির স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখে বোর্ডের সঙ্গে সমন্বিত প্রশাসনিক কাঠামো গঠন।


বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিভাগের নুতন করে মাঠ পর্যায়ে তৎপরতা নিঃসন্দেহে কিছুটা আশার আলো দেখালেও, এটি কতটা কার্যকর হবে তা নির্ভর করছে বাস্তবায়নের গতির উপর। শুধু শুনানি নয়, এখন প্রয়োজন সুপারিশ বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা ও সময়সীমা।



সূত্র: বিদ্যুৎ বিভাগ, পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড, বিভিন্ন সমিতির কর্মকর্তাদের মন্তব্য, 

মাঠ পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চুক্তিভিত্তিক/অস্থায়ী কর্মীদের জন্য সংবিধানের প্রাসঙ্গিক ধারা:

  ধারা ২০(১)  রাষ্ট্র শ্রমকে মর্যাদা দেবে এবং উপযুক্ত পুরস্কার দানে নিশ্চিত করবে। এটি শ্রমের সম্মান, নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার কথা বলে, যা অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।  ধারা ২৯(১)  প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ ও পদপ্রাপ্তি সকল নাগরিকের জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত থাকবে। এটা চুক্তিভিত্তিক বা অস্থায়ী নিয়োগে যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করার কথা বলে। ধারা ২৯(৩)  এখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র কোনো বৈষম্য করবে না, তবে কিছু ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা থাকতে পারে (যেমন প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইত্যাদি)। প্রশাসনিক নীতিমালা ও নির্দেশনা: বাংলাদেশে চুক্তিভিত্তিক বা অনিয়মিত কর্মচারীদের বিষয়ে মূলত বিভিন্ন প্রশাসনিক পরিপত্র (office order/circular) অনুসরণ করা হয়: ১. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা (চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ): চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা” অনুসারে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বা বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা ও সীমাবদ্ধতা: নির্ধারিত মেয়াদে (সা...

পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে নেই অগ্রগতি মাঠে অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে অগ্রগতি নেই, মাঠ পর্যায়ে বাড়ছে অস্থিরতা। পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত সংস্কার কার্যক্রমে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন (বাপবিএ)-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকারের লিখিত আশ্বাসের ভিত্তিতে চলমান আন্দোলন গত ৫ জুন ২০২৫ তারিখে স্থগিত করা হলেও গত দুই মাসে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে ১৭ জুন দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছিল — একটি REB-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা কোম্পানি গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব তৈরির জন্য এবং অন্যটি মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়মিতকরণ ও অন্যায় বদলির বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য। তবে বাস্তবে এসব বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনকালীন সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৫ জন লাইনক্রুর বিষয়টি এখনও অনিষ্পন্ন রয়েছে। পাশাপাশি সাময়িক বরখাস্ত, বদলি ও সংযুক্তদের পদায়ন, চাক...

বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি পুনঃপর্যালোচনায় সরকারের সিদ্ধান্ত: অর্থ উপদেষ্টা

 বর্তমান সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে করা বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংক্রান্ত সব দেশি-বিদেশি চুক্তি পুনঃমূল্যায়ন করা হবে। ১৫ জুলাই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে কিছু বিদ্যুৎ প্রকল্পে চুক্তি করা হয়েছে যেগুলোর শর্ত অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যপূর্ণ। এসব চুক্তি যাচাইয়ের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে এবং আমরা সেই অনুযায়ী আইনগত সহায়তা নিয়ে কাজ করছি।” তিনি আরও বলেন, “সরকারি খাদ্য মজুত বর্তমানে সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে—বোরো ধান সবচেয়ে বেশি, এরপর আমন, এবং আউশ সবচেয়ে কম কেনা হয়।” এ সময় তিনি আরও জানান, আগামী ৫ আগস্ট ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ উদ্বোধন করা হবে এবং এর নির্মাণ খরচ ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।